বিদেহি প্রেমিকা
#Pradip Kumar Biswas
চতুর্থ পর্বের লিঙ্ক http://pradipstories.blogspot.in/2016/09/blog-post_39.html
পঞ্চম
পর্ব # ভুতের গল্প #Bengali ghost story
আমাদের একটু সন্দেহ কিন্তু গোড়া থেকেই হচ্ছিল। উচ্চবিত্ত
সমাজের এক গুরুজি এতটাই মহান যে শুনেই চলে এলেন? আর উনি তো এ-সি গাড়িতে যাচ্ছিলেন,
জানলেন কি করে? লোক-মুখে তো শোনেননি ।
তবে যোগ-বলে কি না হয় তাই হবেও বা। দোকানে
চা খেতে খেতে দুই বন্ধু এই সব আলোচনা করছিলাম।
রিসার্চ স্কলার এক সিনিয়র দাদা আমাদের টিমে থাকতেন যিনি নিজের কাজের সাথে সাথে আমাদেরও
কোনও অসুবিধে হলে দেখিয়ে দিতেন । তিনি আমাদের সাথেই থাকতেন একটা বড় ঘরে আরও দুই
জনের সাথে।
ফিরে এসে দেখি তাঁর ঘরে আড্ডা জমেছে । আমরা দুই
বন্ধু একটু আগে চায়ের দোকানে যা আলোচনা করছিলাম সেই নিয়েই জোর আলোচনা চলছে এবং
আসরের মধ্যমনি নিঃসন্দেহে অনিল । পুরো রহস্যের চাবি-কাঠি ছিল ওর হাতে যা ও এখন একটু একটু করে খুলছে ।
লেবু লঙ্কা মাড়িয়ে ফেলবার ব্যাপারটা দেখে অনিল বুঝে
যায় বাড়ীওয়ালি ললিতাভ্যাম্পকে ঠিক রাস্তায়
আনবার জন্য লেবু লঙ্কা চটকানোর চাইতেও
একটা বড় মাপের ভুতের ভয় দেখানোর খেলার মত
কিছু করতে হবে।
সেই রবিবারে আমাদের কষ্ট দেখে ও সোজা যায় ওর ডাক্তার
দিদির কাছে যার সুপারিশে আমদের ভাড়াটে হিসাবে রাখতে রাজি হন বাড়ীওয়ালা দু’মাসের
অগ্রিম ভাড়ার চুক্তিতে ।সব শুনে ওর দিদি যে এই বাড়িওয়ালা পরিবারটিকে নানাভাবে
চিকিৎসায় সাহায্য করেছে রেগে অগ্নিশর্মা ।
প্রেতাত্মার ভয় দেখাবার
প্ল্যানটা ওর ডাক্তারি-পড়ুয়া দিদিকে বলতেই উনি ওকে এক জোড়া
নরমুণ্ড আর হাড়গোড় দিয়ে সাহায্য করতে রাজি হন।
অনিলের সাথে অনেক নাটক গ্রুপের ওঠা-বসা ছিল। ওর পরিচিত একটি
নাটক গোষ্ঠী সব শুনে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে । তাঁদের
একটি নাটকে এইরকম একটি দৃশ্য আছে। ভালই হবে, ড্রেস রিহারসাল হয়ে যাবে।
দুপুরেই নাটক-গোষ্ঠীর লোকজন এই বাড়ির একতলাতে দুটি আস্থানা পেতে দিয়ে যায় । গুরুজি একজন সখের
অভিনেতা ও পেশাদার যাদুকর।সদানন্দও
অভিনেতা এবং ওনার জাদুর খেলার সহকারি।
সেই সময় আমরা সবাই যা দেখেছি তা আসলে যাদু-নাটক। সবাইকে উনি
যষ্টিমধু দিলেও হাতসাফাই এর খেলায় জয়হরি- দম্পতিকে চিরতার কাঠি দিয়েছিলেন।এমন কি
পেছনের বাগানে ওরে বাবাগো বলে ভুতের
পালিয়ে যাবার চিৎকারটা হরবোলা সদানন্দের খেল।
বাথরুম ও রান্নাঘরে তোড়ে জল পড়ছে। আলো হলুদ হয়ে
নিভে যাচ্ছে না । জাদুকরের জাদু কতদিন থাকে সেইটাই দেখবার । যাই হোক আমরা
সকলেই অনিলের প্রচেষ্টা এবং বুদ্ধির প্রশংসা করলাম । প্রেমে ও
রণে জয়লাভের জন্য সবকিছু করা যেতেই পারে ।
এক এক করে বাথরুমে তোফা স্নান সেরে ও তাড়াতাড়ি খেয়ে
সবাই ঘুমিয়ে পড়লাম কিন্তু জোর হাঁক ডাকে
রবিবারেও সকাল সকাল উঠে পড়তে বাধ্য হলাম ।
লাল পুরোহিত এক জন তান্ত্রিককে ধরে নিয়ে এসেছে।সেই
তান্ত্রিক নানারকম ভয় দেখাচ্ছে।
কালকের কাটানটা নাকি হোমিওপ্যাথিক ডোজ। ওতে তেমন কোনও কাজ হয় নি। তান্ত্রিক
বলছে তেনারা নাকি এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই সবের ঠিকঠাক কাটান না করালে বিপদ
অনিবার্য ।
এই সময় বাথরুমে বাড়ীওয়ালা
জয়হরি পা হড়কে পড়ে গিয়ে আর্তনাদ করতে থাকেন । আমরা কয়েকজন তাঁকে নিয়ে দৌড়ালাম
ডাক্তারখানায় ।
No comments:
Post a Comment